দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির জন্য সিন্ডিকেট একটি বড় সমস্যা বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রোববার (১৭ নভেম্বর) যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ১০০ দিনের কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
আসিফ মাহমুদ যুবক ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। আগে তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও ছিলেন। গত ১০ নভেম্বর আসিফ মাহমুদকে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান পরিবর্তন হচ্ছে। সামনের দিনগুলোতেও নতুন নিয়োগসহ পুলিশের যানবাহন সংগ্রহের কাজ চলমান আছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট একটা বড় সমস্যা। এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন উপদেষ্টা নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি ক্লোজলি বিষয়গুলো দেখছেন। আলুর দাম বেড়ে গিয়েছে আবার শাকসবজির দাম বাড়ছে। সরবরাহ বেড়েছে তারপরও দাম বাড়ছে। সেগুলো তিনি খুব ক্লোজলি মনিটর করছেন।’
‘টাস্কফোর্স এখনো কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় জরিমানা করছেন। মনিটর করছেন। কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত যাতে সরাসরি পণ্য পৌঁছে যায়, সেজন্য আমরা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা দিচ্ছি। টিসিবির কার্যক্রম সক্রিয় করা হয়েছে এবং বাড়ানো হয়েছে। আশা করি সমস্যাগুলো আমরা সমাধান করতে পারবো।’
সরকারের সংস্কার অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমরা আসলে একটা টিম হিসেবে কাজ করছি। রাষ্ট্র সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠনে দশটি সংস্কার কমিশন করা হয়েছে। কমিশনগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টাসহ স্টেকহোল্ডাররা নিয়মিত আলোচনা করছি। আশা করি যে তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যেই সরকারের কাছে একটা প্রস্তাবনা আসবে। সরকারও স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে সেগুলো বাস্তবায়নের পথে এগোতে পারবে।
এরপরেই কি নির্বাচন- এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘অবশ্যই। সংস্কারের পরে নির্বাচন এটা তো আমরা বারবার বলছি।’
একশ দিনের অগ্রগতি তুলে ধরার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সরকারের বিভিন্ন জায়গায় আমরা জবাবদিহি নিশ্চিত করবো, কিন্তু আমরা কার কাছে জবাবদিহি করবো? আমরা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। সেই জায়গা থেকে একশদিনের রিপোর্টটা প্রকাশ করলাম। কতটুকু ভালো করতে পেরেছি, কতটুকু পারিনি- সেই মূল্যায়ন জনগণের।
‘আমার দিক থেকে মনে হয় কাজ করার আরও সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা অনেক ধরনের ফায়ার ফাইটিংয়ের মধ্যদিয়ে গিয়েছি। দশ দিনের মধ্যে সাতদিন নানা অপ্রত্যাশিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে ব্যয় করতে হয়েছে। আর তিনদিন আমরা মূল কাজটি করার সুযোগ পেয়েছি। আমার মনে হয় ১০০ দিনের মধ্যে ৩০ দিন আমরা মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক যে নীতিনির্ধারণী কাজ সেটা করার সুযোগ পেয়েছি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ট্রানজিশন পিরিয়ড এমনই হওয়ার কথা, এটাই স্বাভাবিক। আশা করছি, আগামী তিন মাসে এখনকার চেয়ে দ্বিগুণ কাজ করতে পারবো। কারণ পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।
উপদেষ্টা আরও বলেন, যখন উপদেষ্টা পরিষদের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমরাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তখন অনেক সংশয় ছিল- সদ্য গ্র্যাজুয়েট শেষ করা আমরা কতটুকু মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারের চালাতে পারবো। আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল এবং এখনো আছে। আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জটা শুধু নিজেকে প্রমাণ করা নয়, আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ এই জেনারেশনটাকে প্রমাণ করার জন্য- এ তরুণ প্রজন্ম শুধু ডেসট্রাক্টিভ ওয়েতে একটা ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন করতে পারি না, আমরা গঠনমূলকভাবে দেশ পুনর্গঠনের কাজও করতে পারি।
‘আমরা দেশকে পলিসি লেভেলে ভালো কিছু উপহার দিতে পারি। আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ের সেই কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চাই আমাদের প্রজন্মের যারা আছেন... আপনারা জানেন প্রাইভেট সেক্টরে আমাদের প্রজন্ম খুব ভালো করছে। সেখানে পরিবর্তনটা খুব দ্রুত হয়। সেখানে অ্যাডাপটেশনটা খুব দ্রুত হয়। যে যোগ্য তাকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু পাবলিক সেক্টরে অনেক হায়ারার্কি আছে, অনেক সময় যায় তাই তরুণদের অংশগ্রহণ কম। বিভিন্ন পর্যায়ে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।
টিএইচ